ফরিদপুরের গান্ধীঃ মহাত্না চন্দ্রনাথ বসু
অসাম্প্রদায়িক, ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গড়ার প্রাণপুরুষ, শিক্ষানুরাগী, শিক্ষা বঞ্চিত জনপদের আলোকবর্তিকা ও ফরিদপুরের গান্ধী বলে খ্যাত মহাত্মা চন্দ্রনাথ বসু সারা জীবন দুঃস্থ, আর্তপীড়িত, অসহায় মানুষের সেবায় নিজের জীবন উৎসর্গ করে গেছেন।
মহাত্মা চন্দ্রনাথ বসু ১৮৯৩ সালের ডিসেম্বর মাসে গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী উপজেলার রামদিয়া গ্রামে এক মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। এলাকাবাসীর কাছে তিনি চন্দ্র বোস, চন্দর বোস, বোস মশায় বা মেজকর্তা বলেই সমধিক পরিচিত ছিলেন। তাঁর পিতার নাম কৈলাস চন্দ্র বসু এবং মাতার নাম মৃণালিনী বসু। কৈলাস বসুর তিন পুত্র জ্যেষ্ঠ যোগিন্দ্রনাথ বসু, মেঝো চন্দ্রনাথ ও ছোট উপেন্দ্রনাথ বসু ও দুই কন্যা। পাঁচ বছর বয়সে এশিয়াটিক কলেরায় আক্রান্ত হয়ে বিনা চিকিৎসায় তাঁর মায়ের মারা যাওয়ার মর্মান্তিক ঘটনা শিশু চন্দ্রনাথের মনে গভীর ক্ষতের সৃষ্টি করে। এই ক্ষত থেকেই তিনি জনসেবার ব্রত নেন। ১০ বছর বয়সে তাঁর পিতা পরলোক- গমন করেন। ফুকরা মদনমোহন একাডেমিতে সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তি হয়ে পড়ালেখাকালীন চোখের অসুখ দেখা দিলে তাঁর আর লেখাপড়া করা সম্ভব হয়নি। জীবনের প্রথম হতেই তিনি বড় ভাই যোগিন্দ্রনাথ বসুর উৎসাহ, অনুপ্রেরণা ও সহযোগিতা তাকে গঠনমূলক কাজে আত্মনিয়োগে উদ্বুদ্ধ করে। তাঁর সার্বিক পল্লী উন্নয়নের কর্মকাণ্ড বাংলাদেশের ফরিদপুর, যশোর, বরিশাল, খুলনা জেলায় এবং পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া, মুর্শিদাবাদ, চব্বিশ পরগনাসহ পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন জেলায় সম্প্রসারিত ছিল। এই অঞ্চলে বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সমাজসেবামূলক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তিনি স্থাপন করেছেন ও প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানসমূহের উন্নয়ন সাধন করেছেন।
তাঁর পোশাক-পরিচ্ছদ, আচার-ব্যবহার, কথা-বার্তা চাল-চলন সব কিছুতেই তিনি একজন নিষ্ঠাবান গান্ধীবাদী বলে পরিচিত ছিলেন। ১৯৩২ সালে আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায় চন্দ্র বাবুর গঠনমূলক কাজের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং তাকে 'ফরিদপুরের গান্ধী' নামে আখ্যায়িত করেন। তিনি মহাত্মা গান্ধীর মতই হাঁটু পর্যন্ত থান ধুতি পরতেন, খালি গায়ে থাকতেন এবং পায়ে পরতেন টায়ারের স্যান্ডেল। তিনি যথাসময়ে কাজ সম্পাদনের জন্য একটি ঘড়ি পরতেন। কাউকে কথা দিয়ে তিনি যথাসময়ে সেখানে যাননি এরকম ঘটনা কখনও ঘটেনি। মানবসেবা, অনাড়ম্বর বৈষ্ণব জীবনযাপন, বিনয়, সহিষ্ণুতা, অক্লান্ত কর্মপ্রচেষ্টা, সংকল্পের দৃঢ়তা, অপরাজেয় তেজস্বিতা ইত্যাদি গুণে চন্দ্রনাথ মহাত্মা গান্ধীর সমধর্মা পুরুষ ছিলেন। মহাত্মা গান্ধীর সাহচর্যও পেয়েছিলেন তিনি।
১৯০৫ সালে স্বদেশী আন্দোলন শুরু হলে তিনি মাত্র ১২ বছর বয়সে দেশ ও সমাজ সেবার আত্মনিয়োগ করেন। ১৯০৯ সালে ঝড় ও বন্যায় গ্রামের অনেক বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়। চন্দ্রনাথ বসু এসকল বাড়িঘর মেরামতে ঝাঁপিয়ে পড়েন। দেশবাসী বা কলকাতায় যারা কর্মরত ছিলেন তাদের কাছ থেকে সাহায্য নিয়ে ৪০-৪৫টি ঘর মেরামত করে দেন। তিনি তাদের বস্ত্রাদি ও সপ্তাহ খানেকের চাল-ডাল দেয়ার ব্যবস্থা করেন। ১৯১০ সালে রামদিয়া শশ্মশানে 'শান্তি আশ্রম' নামে এক সেবা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করে গ্রামগঞ্জের দরিদ্র জনগণের সেবার সূচনা করেন। তিনি মূলত কৃষি জমি নষ্ট না করার মানসেই এই শ্মশানের জায়গাটি বেছে নিয়েছিলেন। ১৯১৩-১৪ সালে তিনি নবদ্বীপ, গয়া, কাশী, বৃন্দাবন, হরিদ্বার প্রভৃতি তীর্থস্থান ভ্রমণ করেন। তিনি বর্তমান পশ্চিমবঙ্গের নবদ্বীপের শ্রী প্রাণগোপাল গোস্বামীর কাছে দীক্ষা গ্রহণ করেন। দীক্ষা গ্রহণের বিষয়টি ছিল তাঁর সমাজসেবারই একটি প্রতিদান। প্রভু প্রাণগোপাল গোস্বামী রোজ সন্ধ্যায় একটি পাকা বাড়ির ছাদে শ্রীমত্রভাগবত পাঠের আসর বসাতেন। দিনে ছাদটিতে রোদ থাকায় সন্ধ্যাবেলায় উত্তপ্ত ছাদে বসতে সবারই কষ্ট হত। এক সন্ধ্যায় দেখা গেল ছাদটি বেশ ঠাণ্ডা। ফলে সকলেই স্বস্তি বোধ করলেন। কারণ অনুসন্ধান করে দেখা গেল, এক নবাগত অপরিচিত যুবক প্রতিদিন বিকেলে জল ঢেলে ছাদটি ঠাণ্ডা করে রাখে। তারা যুবকের খোঁজ করতে লাগলেন। অবশেষে পরিচয় পাওয়া গেল সেই যুবকের। তিনি হলেন চন্দ্রনাথ। চন্দ্রনাথের সমাজসেবার এমন মনোভাবে প্রভু প্রাণগোপাল গোস্বামী খুব খুশি হলেন এবং সানুগ্রহে তিনি চন্দ্রনাথকে দীক্ষা দিলেন।
স্কুলে পড়ার সুযোগ না পেলেও তিনি প্রকৃতির পাঠশালায় পাঠগ্রহণ করেছিলেন। যিনি মানুষের কল্যাণে সুদীর্ঘ ৮৬ বছর যাবৎ অক্লান্ত পরিশ্রম আর কঠোর সাধনা করেছেন। বন্যা, ঘূর্ণিঝড় প্রভৃতি প্রাকৃতিক দূর্যোগের সময় আর্তমানবতার সেবার মনোভাব নিয়ে ছুটে যেতেন অসহায় মানুষের পাশে।বন্যা প্রতিরোধের জন্য বাঁধ নির্মাণ, খরায়, জল সেচের জন্য খাল খনন, যোগাযোগের জন্য রাস্তা নির্মাণ, মজা পুকুর পরিস্কার করা, বন-জঙ্গল পরিস্কার করা এই ছিল তার কাজ।শিক্ষা প্রসারে তিনি নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে গেছেন। গণমানুষের মুক্তির জন্য জীবনের পুরোটা সময় নিঃস্বার্থভাবে ব্যয় করেছেন।মানবকল্যাণে দীর্ঘস্থায়ী, টেকসই এবং বাস্তবধর্মী কর্মপরিকল্পনা করা ও তা বাস্তবায়ন করাই ছিল তাঁর অন্যতম উদ্দেশ্য। দেশসেবা বলতে চন্দ্রনাথ বুঝতেন জনমানুষের সেবা। তাদের সুখ-দুখ, আনন্দ-বেদনা, প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি ইত্যাদি নিয়ে তিনি সর্বদা চিন্তা করতেন। সবার জন্য যেটি কল্যাণকর ও দীর্ঘস্থায়ী কাজে লাগবে তিনি সে সম্পর্কে নিজে ভাবতেন ও তা বাস্তবায়নের পরিকল্পনা করতেন এবং নিজে প্রথমে কাজে হাত দিয়ে সকলকে জানাতেন। তাঁর ছিল মানুষকে উদ্বুদ্ধ করার এক অসীম ক্ষমতা। এ এলাকার ফসল নষ্ট হবার সবচেয়ে বড় কারণ ছিল মধুমতির পানি প্রবেশ করা। তিনি সেটি আমলে নিয়ে এলাবাসীর সহযোগিতায় পান্ডুলি খালের বাঁধ দেন। ফলে বন্যার পানি প্রবেশ রোধ পায় এবং এ এলাকার জমিতে ফসল উৎপাদন অব্যাহত থাকে। তেঁতুলিয়া-বলুগাঁ খাল, কমলাপুরের বোসের খাল, উজানী বোসের খাল, বোসের হাগার খাল, এরকম অসংখ্য খাল-নালা ও বাঁধ মহাত্মা চন্দ্রনাথ বসুকে অমর করে রেখেছে। খরায় জল সেচের জন্য খালকাটা, যোগাযোগের জন্য রাস্তা নির্মাণ, মজা পুকুর পরিষ্কার করা, জঙ্গল পরিষ্কার করা ইত্যাদি ছিল তাঁর রোজকার কাজ।
মহাত্মা গান্ধীর নেতৃত্বাধীন স্বাধীনতা আন্দোলনে যোগদান করে কারাবরণ করেন চন্দ্রনাথ। 'জলমহালের মাছের স্বত্ব প্রজার' এই দাবির ফলে জমিদারদের সাথে তাঁর বিরোধ বাধে। জমিদারগণ নানা অপকৌশলে মামলায় ফেলে তাঁকে জেলে পুরে দিলেন। কিন্তু ততদিনে আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়, ডাঃ বিধান চন্দ্র রায়, ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী, সতীশচন্দ্র দাস গুপ্ত প্রমুখ নেতৃবর্গের সাথে চন্দ্রনাথের পরিচয় হয়। অনেকে তাঁর মূল কর্মস্থল রামদিয়া ঘুরেও গেছেন। তাঁরা ব্যারিস্টার জি, গুপ্তকে পাঠিয়ে উচ্চ আদালত থেকে তাঁকে খালাস করে আন-ে লন। উক্ত মামলা ফরিদপুরে বিশেষ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। তাতে চন্দ্রনাথ বসু সসম্মানে মুক্তি পান এবং তাঁর কাজের সততা ও নিষ্ঠা প্রমাণিত হয়। চন্দ্রনাথ বুঝতে পারলেন যে, প্রজাদের শোষণ করার কাজে জমিদারবর্গের পেছনে মূল শক্তি ব্রিটিশ সরকার। এই ভেবে তিনি স্বাধীনতা যুদ্ধে যোগদান করেন।
১৯৩৮ সালে বরিশালের বৈরল গ্রামে একটি বিরাট সভার আয়োজন করেন চন্দ্রনাথ বসু। প্রায় ১০০ টি গ্রামের লোক সেখানে উপস্থিত হয়। সভায় ডা. শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, দেবেন ভট্টাচার্য প্রমুখ নেতৃবর্গ যোগদান করেন। পরের বছর তাঁর প্রতিষ্ঠিত রামদিয়া শান্তি আশ্রমে সার্বজনীন দুর্গাপূজার ব্যবস্থা করা হয়।
তিনি ১৯৪২ সালে রামদিয়ায় রামদিয়া শ্রীকৃষ্ণ কলেজ ও রামদিয়া শ্রীকৃষ্ণ শশীকমল বিদ্যাপীঠ এবং ১৯৪৬ সালে রামদিয়া বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর 'অসমাপ্ত আত্মজীবনী' গ্রন্থে চন্দ্রনাথকে একজন সমাজকর্মী হিসেবে উল্লেখ করেছেন। পাকিস্তান হওয়ার পর একজন সরকারি কর্মচারী অত্যুৎসাহে প্রশাসনকে মিথ্যা খবর দিয়ে তাঁকে গ্রেফতার করায় এবং তাঁর শাস্তি হয়। শহীদ সোহরাওয়াদী গোপালগঞ্জে এসে ১৯৪৮ সালে সেই কর্মচারীকে বলেছিলেন, 'চন্দ্র বোসের মত মানুষকে গ্রেফতার করে ও মিথ্যা মামলা দিয়ে পাকিস্তানের বদনামই করা হচ্ছে।' চন্দ্রনাথ বোস শাস্তি ভোগ করে আবার নিরাপত্তা বন্দি হয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন তাঁর মতো নিঃস্বার্থ ত্যাগী ভদ্রলোককে দিয়ে সমাজের অনেক কাজ হবে। কিন্তু পাকিস্তান সরকার তাঁর সে কথা রাখেনি। কারণ কেউ কেউ ব্যক্তিস্বার্থে সরকারকে তাঁর সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য সরবরাহ করে। বঙ্গবন্ধু জেলে বসে জ্বর, মাথার যন্ত্রণা ও বুকে ব্যাথা নিয়ে যখন ভুগছি-ে লন তখন চন্দ্রনাথ সারারাত বঙ্গবন্ধুর মাথায় পানি ঢেলেছেন, প্রয়োজনমত ঔষধ খায়িয়েছেন। তিনদিন তিনি না ঘুমিয়ে তাঁর সেবা করেছেন। বঙ্গবন্ধু তাঁকে বিশ্রাম নিতে বললে তিনি বলেছিলেন 'জীবনভর তো এই কাজ করে এসেছি, এখন বুড়াকালে কষ্ট হয় না।' ফরিদপুর জেলে বসে চন্দ্রনাথ হার্নিয়ার রোগে মুমূর্ষু অবস্থা হলে সকলের অনুরোধে যখন সিভিল সার্জন শেষ চেষ্টা হিসেবে হাসপাতালে ভর্তির প্রস্তুতিকালে তিনি বঙ্গবন্ধুর সাথে দেখা করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। বঙ্গবন্ধু বললেন, 'আমাকে সেখানে নিয়ে যাওয়া হলে তিনি আমাকে দেখে কেঁদে ফেললেন এবং বললেন, 'ভাই, এরা আমাকে 'সাম্প্রদায়িক' বলে বদনাম দিল, শুধু এই আমার দুঃখ মরার সময়। কোনদিন হিন্দু-মুসলমানকে দুই চোখে দেখি নাই। সকলকে আমায় ক্ষমা করে দিতে বোলো। আর আমার অনুরোধ রইল, মানুষকে মানুষ হিসেবে দেখ। মানুষে মানুষে কোন পার্থক্য ভগবানও করেন নাই। আমার তো কেউ নাই, আপন ভেবে তোমাকেই শেষ দেখা দেখে নিলাম। ভগবান তোমার মঙ্গল করুক।' অপারেশনের পর তিনি সুস্থ হয়ে ওঠেন। এদিকে তাঁর মুক্তি দেওয়ার খবর আসে। ১৯৫১ সালের জুন মাসে তিনি মুক্তি পান। কারাগার হতে মুক্তিলাভের পরে জেলের দায়িত্বরত ম্যাজিস্ট্রেট বলেছিলেন, 'যদি পাকিস্তানে থাকতে হয়, তবে গ্রামে থাকতে হবে। আর যদি চিকিৎসা করতে কলকাতা যেতে চান, আমাদের কোন আপত্তি নেই। যখন আসবেন, পুলিশকে খবর দিতে হবে।' কারাগার হতে মুক্তিলাভের পরে তিনি পশ্চিম বাংলায় চলে যান। সেখানে গিয়ে তিনি শুরু করেন নবোদ্যমে সমাজকর্ম। তার সমাজকর্মের সাক্ষ্য বহন করে আছে পশ্চিমবঙ্গের চন্দ্র বসু অনাথ সেবাশ্রম সংঘ। ১৯৫২ সালে পশ্চিম বাংলার নদীয়া জেলার বগুলা অঞ্চলে তিনি একটি কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। সে কলেজেরও নাম রাখেন শ্রীকৃষ্ণ কলেজ। ১৯৫৪ সালে তিনি মেদিনীপুর জেলার ডেবরা থানার পশং গ্রামে একটি হাইস্কুল ও একটি গার্লস স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে পশ্চিম বাংলায় তিনি আরও অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করেছেন।
১৯৫৭ সালের জানুয়ারি মাসে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী আতাউর রহমান ও মন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কলকাতা রাজভবনে চন্দ্রনাথ বসুর সাথে সাক্ষাৎ করে তাঁকে পূর্ববাংলায় গিয়ে বসবাস করার আমন্ত্রণ জানান। তাঁদের আমন্ত্রণে চন্দ্রনাথ বসু জন্মভূমি রামদিয়ায় এসে দেখলেন যে, শ্রীকৃষ্ণ কলেজের কাছে তিনি যে হাট বসিয়েছিলেন তাতে কলেজের কাজকর্ম ও শৃঙ্খলা ব্যহত হচ্ছে বিধায় তা স্থানান্তর করেন। বালিকা বিদ্যালয়টি ধ্বংস হওয়ার উপক্রম হচ্ছিল। তার পুনঃব্যবস্থা করা, খাল-কাটা ও যেসকল রাস্তা-ঘাট নির্মাণাদি বন্ধ ছিল তার ব্যবস্থা করা, ঘৃতকান্দির বন্ধ ডাক্তারখানাটি রামদিয়ায় স্থানান্তরিত ও চালু করা ইত্যাদি কাজ সম্পন্ন করেন। এসব কাজে মাসাধিককাল রামদিয়ায় অবস্থান করার পর পুনরায় তিনি কলকাতায় ফিরে যান।
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের আহ্বানে চন্দ্রনাথ বসু আবার রামদিয়া চলে আসেন। ১৯৭৫ সালে ১৫ই আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হলে তিনি ঐ দিনই কলকাতায় চলে যান। ১৯৭৯ সালের ২রা জুন ৮৬ বছর বয়সে তিনি কলকাতায় মারা যান।